সুন্দরবন” যার নামকরণ করা হয়েছিল সুন্দরী গাছকে কেন্দ্র করে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অবস্থিত এই বন সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হেসেবে আখ্যায়িত লাভ করে ।এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত।
ধারনা করা হয় মুঘল আমলের কোন এক রাজা বনটি ইজারা নিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের জন্য। অনেক দস্যুর দলই বনে আশ্রয়ই নিত সম্রাট আকবরের সৈন্যদের সহায়তায়। তাদের মধ্যে অনেকেই বাঘের শিকার হয়েছে । সুন্দরবনের আয়তন প্রথম মাপা হয় ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগিরের কাছ থেকে স্বত্বাধিকার পাওয়ার পর পরেই । বনের সব পরিচালন সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ১৮৬০ সালে বন বিভাগ ( ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ) প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে। পরিচালনা কমিটি এমন রূপে নকশা করা হয়েছিল যাতে যাই গুপ্ত ধন লুকায়িত অবস্থায় থাকুক না কেন তা পাওয়া সম্ভব এবং এ কাজের জন্য ব্যাপক শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল যার কারনে বনের কিছু অংশে তখন থেকে আজ পর্যন্ত কিছু মানুষ বসবাস করে আসছে ।
১৮৭৫ সালে বনের একটা বড় অংশকে বন আইন (১৮৬৫) মোতাবেক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয় । ১৮৭৯ সালে প্রাথমিক পরিচালনার নিমিত্তে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয় খুলনাতে । সুন্দরবন ১৬৯০০ স্কয়ার কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত যার একটি অংশই বেষ্টিত রয়েছে স্বচ্ছ পানি আর বাঘ আরও নানা প্রজাতিতে । যেহেতু সুন্দরবন অনেকগুলো “River Channel” দ্বারা পরিবেষ্টিত , সেহেতু এর কোন কোনটি বাংলার সাথে যোগাযোগ সৃষ্টিতে অটল ভুমিকা পালন করে লঞ্চ বা ইস্টিমার ব্যাবহার করে ।
বনের মোট ১৬৯০০ বর্গ কিলোমিটার মধ্যে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশের এবং ৪১১০ বর্গ কিলোমিটার ভারতের অংশ হিসেবে পরেছে যার ১৭০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে পানি । এবং জরিপ মোতাবেক ৫০০ বাঘ ও ৩০,০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে এখন সুন্দরবন এলাকায় ।
পরিশেষে , বর্তমানে সুন্দরবন বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত । এই সুন্দরবনের সুন্দরকে রক্ষা করা তথা বাঘ , হরিন , কুমির,বন্য পাখি আমাদের নৈতিক দায়িত্ববোধ ।